১০:৪৮:১৭ বুধবার, ২১ এপ্রিল ২০২১
স্পোর্টস ডেস্ক: কাগজে-কলমে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় দলের আর কোনো খেলা নেই। যদিও মাঝে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ রয়েছে। কিন্তু সেটি ছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি। শেষ পর্যন্ত হচ্ছেনা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। আর করোনা ভাইরাসের এই সময় শুধু মাত্র তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে নিউজিল্যান্ডের যাবে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল তা ভাবা একপ্রকার বোকামি।
তার কারণ সাত দিনের জন্য নিউজিল্যান্ড সফরে যাবে কি বাংলাদেশ? তা নিয়ে এখনো অনেক প্রশ্ন রয়েছে। তবে আগামী সেপ্টেম্বরেই ক্রিকেট ফিরছে বাংলাদেশে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শুরু হতে পারে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। ক্রিকেট ফিরাতে উঠে পড়ে লেগেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। তবে দেশের মাটিতে এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ আয়োজন করা একপ্রকার দুঃস্বপ্ন।
তাই বাংলাদেশে এখন চাচ্ছে বিদেশের মাটিতে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে। আর সেই জন্য শ্রীলংকা এবং আয়ারল্যান্ডে বেছে নিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। আগামী মাসে শ্রীলংকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে যাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের।
কিন্তু বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প'রিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসার কারণে শেষ পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করা হয় ওই বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সিরিজ। অন্যদিকে এপ্রিলে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজ ছিল বাংলাদেশের।
এবারে এই সিরিজ নিয়ে আবারো আশার আলো দেখাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন ক্রিকবাজ কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এখন দ্রুত ক্রিকেট ফেরানো এবং স্থগিত হয়ে যাওয়া সিরিজগুলো আয়োজন করাই আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ।’
শ্রীলংকা এবং আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে স্থগিত হওয়া সিরিজের সূচি পুনরায় নির্ধারণের কথা বোর্ড ভাবছে জানিয়ে বিসিবির সিইও বলেন, ‘দেশের করোনা প'রিস্থিতি ক্রিকেট আয়োজনের পক্ষে এখনও অনুকূলে নয়। আমরা তাই দেশের বাইরে স্থগিত হওয়া সিরিজ আয়োজনের কথা ভাবছি।
আমরা শ্রীলংকার বিপক্ষে স্থগিত হওয়া সিরিজ খেলার কথা চিন্তা করছি। ওটা যদি চূ'ড়ান্ত হয়, আমরা দেশের কিছু ক্রিকেট দেখতে পাবো। এরপর প'রিস্থিতি অনুকূলে থাকলে আয়ারল্যান্ডে যাওয়া যায় কি-না দেখবো। এই দুই সিরিজ নিয়ে আমরা আপাতত কাজ করছি।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরানোর পাশাপাশি ঘরোয়া ক্রিকেট ফেরানোর কথাও ভাবছে বিসিবি। শোনা যাচ্ছে, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর শুরু হবে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। বিসিবি সিইও সূচি নিয়ে কিছু না বললেও ঘরোয়া ক্রিকেট ফেরানোর চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন।
এছাড়া এশিয়া কাপ, টি-২০ বিশ্বকাপ স্থগিত হলেও বিসিবি আর্থিক সং'কটে পড়বে না বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা। তার মতে, ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট লাভবান হওয়ার সিরিজ ছিল না। বাকি সিরিজগুলো আয়োজন সম্ভব হলে যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে ওঠা যাবে।
তবে শুধু বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী নয় শ্রীলঙ্কা সিরিজ নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান। গতকাল দেশের একটি সংবাদ মাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে আকরাম খান বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্থগিত হওয়ার পর এ বছর আমাদের আর কোন খেলা নেই। ঈদের পর আমরা সবাই মিলে বসবো। চেষ্টা করবো শ্রীলঙ্কার সাথে আমাদের যে সিরিজটি ছিল সেটা করার।’
‘এটার সাথে দুই একটা দেশের সাথে কথা বলবো যেন আমরা ক্রিকেটটা চালু করতে পারি। কিন্তু এই মুহূর্তে আমাদের দেশে বাইরের দলকে এনে খেলানো ক'ঠিন হবে। আমরা চেষ্টা করবো বাইরে গিয়ে যেন খেলতে পারি।’
ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান বলেন, ‘একটার পর একটা সিরিজ স্থগিত হয়েছে আমাদের। এটা নিয়ে খুবই হ'তাশ আমরা। পুরো দেশবাসীও হ'তাশ। কারণ অনেকগুলো সুযোগ আমরা মিস করেছি। অনেকগুলো টেস্ট, টি-টোয়েন্টি ছিল। এগুলো খেলতে না পারাটা সত্যি আমাদের জন্য দুঃখজনক।’
তবে এর আগে বাংলাদেশ এইচপি দল শ্রীলঙ্কা সফরে যাবে বলে কিছুদিন আগেই জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। ইতিমধ্যেই দেশের সকল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ব্যক্তিগতভাবে অনুশীলন শুরু করে দিয়েছে ১২ জন ক্রিকেটার। শুধু তাই নয় আগামী মাসের মাঝামাঝি সময়ে ৩৮ সদস্যের দল নিয়ে কন্ডিশনিং ক্যাম্প শুরু করবে বাংলাদেশ দল।
যার মধ্যে রয়েছে হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) দলের ক্রিকেটাররা। এইচপি দলের ক্রিকেটারদের থাকা একটি কারণও রয়েছে। সেপ্টেম্বরে শ্রীলঙ্কা সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশ এইচপি দলের। বাংলাদেশ এইচপি দলের শ্রীলঙ্কা সফর আগেই চূ'ড়ান্ত ছিল।
সূচি অনুযায়ী দলটিকে দ্বীপরাষ্ট্রে পাঠাতে চায় দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এজন্য দুই বোর্ডের মধ্যে আলোচনাও চলছে। সফর চূ'ড়ান্ত হলে বাংলাদেশের দলটি যাবে হাম্বানটোটায়। সেখানে আইসোলেশন শেষে ট্রেনিং শুরু করবে দল।
প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু বলেছেন,‘এইচপি দলকে শ্রীলঙ্কা পাঠানোর আলোচনা হচ্ছে। শ্রীলঙ্কা রাজি হলে আমরা দল পাঠাতে পারবো। আমরা সেভাবেই স্কোয়াড তৈরি করেছি। দুই বোর্ডের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে। সামনে নিশ্চয়ই কোনো আলোচনা হবে।’
শুধু এইচপি নয়, জাতীয় দলের স্থগিত হওয়া সফর নিয়েও দুই বোর্ডের আলোচনা হচ্ছে। অক্টোবর-নভেম্বরের ফাঁকা সূচিতে তিন টেস্ট খেলার ব্যাপারে কথা বলছে দুই বোর্ড। তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ গতমাসে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের করোনাভাইরাস প'রিস্থিতির জন্য অনুশীলন না করতে পারায় স্থগিত ঘোষণা করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড।