০৭:৪৫:৪৬ শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩
স্পোর্টস ডেস্ক : ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জুয়াড়ির প্রস্তাবে রাজি না হলেও জুয়াড়ির সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। আইসিসির জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানিয়েছেন সাকিব নিজেই।
আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী ইউনিট (এসিইউ) গত ২৩ জানুয়ারি ও ২৭ আগস্ট সাকিবকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। সেখানে তিনি জানান, দীপক আগারওয়াল নামের এক জুয়াড়ির ডলারের প্রস্তাব পেয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন তিনি।
সাকিব ওই সাক্ষাৎকারে নিশ্চিত করেছেন, ২০১৭ সালের নভেম্বরে ঢাকা ডায়নামাইটসের হয়ে খেলার সময় তিনি জানতেন, তারই পরিচিত এক ব্যক্তি আগারওয়াল নামের এক জুয়াড়িকে তার ফোন নম্বর দিয়েছেন। সাকিবের পরিচিত ওই ব্যক্তির কাছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা খেলোয়াড়দের ফোন নম্বরও চেয়েছিলেন আগারওয়াল।
এরপর আগারওয়ালের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে কয়েকবার মেসেজ চালাচালি হয় সাকিবের। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে জিম্বাবুয়ে ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ত্রিদেশীয় সিরিজের দলে ডাক পান বাঁহাতি অলরাউন্ডার। ওই সিরিজেও হোয়াটসঅ্যাপে তাদের সঙ্গে কথোপকথন হয়। ওই বছর ১৯ জানুয়ারির ম্যাচে ম্যাচসেরা হওয়ার পর সাকিবকে অভিনন্দন জানান আগারওয়াল।
সেখানে একটি বার্তা ছিল, ‘আমরা কী কাজ শুরু করবো নাকি আইপিএল পর্যন্ত অপেক্ষা করবো।’ কাজ বলতে বোঝানো হয়েছে, দলের ভেতরের তথ্য তাকে দেওয়ার কথা। এই যোগাযোগের কথা দু'র্নী'তিবি'রো'ধী ইউনিটের কাছে গোপন করেন সাকিব।
চারদিন পর ২৩ জানুয়ারি আবারও আগারওয়াল হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজে আরেকটি প্রস্তাব দেন, ‘ব্রো, এই সিরিজে কিছু হবে?’ সাকিব স্বীকার করেছেন, ওই ত্রিদেশীয় সিরিজের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভেতরের তথ্য তাকে সরবরাহ করতে এই বার্তা দেন আগারওয়াল। এই প্রস্তাবও গোপন করেন সাকিব।
২৬ এপ্রিল, ২০১৯ কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে আইপিএল ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের সঙ্গে ম্যাচ খেলার সময় তৃতীয়বার প্রস্তাব পান সাকিব। ওইদিন তার কাছে আগারওয়াল জানতে চান একটা নির্দিষ্ট খেলোয়াড়ের ব্যাপারে যে, তিনি খেলবেন কিনা ওই ম্যাচে। এরপর আরও ভেতরের খবর জানতে চান ওই জুয়াড়ি।
কথা আরও চালিয়ে যান আগারওয়াল। একপর্যায়ে সাকিবের বিটকয়েন, ডলার অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে জানতে চান তিনি। ডলার অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত জানতে বেশি তোড়জোড় করেন আগারওয়াল। এরপরই সাকিব তাকে বলেন, ‘আগে’ তার সঙ্গে দেখা করতে চান তিনি।
ওইদিনের বেশ কয়েকটি মেসেজ ডিলিট করা হয়েছিল। সাকিব নিশ্চিত করেন, ভেতরের খবর জানতে চেয়েই ওই মেসেজগুলো। আগারওয়ালকে নিয়ে আগে থেকেই উদ্বেগের মধ্যে ছিলেন সাকিব। এই কথোপকথনে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, আগারওয়াল একজন জুয়াড়ি। কিন্তু এরপরও আইসিসির দু'র্নী'তি'বি'রো'ধী ইউনিটকে জানাননি সাকিব।
দু'র্নী'তি'বি'রো'ধী আইনের তিনটি নীতিমালা ভঙ্গের অভিযোগে সাকিব আল হাসানকে মঙ্গলবার সব ধরনের ক্রিকেট থেকে দুই বছর নি'ষি'দ্ধ করেছে আইসিসি। তবে আপাতত তার এক বছরের সাজা স্থগিত রাখা হয়েছে। আগামী একবছরে যদি তিনি আর কোনো আইন না ভাঙেন তাহলে তার পরের এক বছরের সাজা বাতিল করা হবে।