০৫:২৮:৫৩ বুধবার, ১০ আগস্ট ২০২২
বরগুনা থেকে : ‘আমি আপ্রাণ চেষ্টা করেছি, অস্ত্রের সামনে দাঁড়িয়েছি, অস্ত্র ধরেছি, চিৎকার করেছি। কিন্তু সাহায্যের জন্য একজনও এগিয়ে আসেনি।’ রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি।
গতকাল সকালে বরগুনা পুলিশ লাইনের কাছে বাবার বাড়িতে সাংবাদিকদের এসব বলছিলেন রিফাতের স্ত্রী। এদিকে নিহত রিফাত শরীফের বাবা দুলাল শরীফ বলেছেন, ‘আমার ছেলেকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, হত্যাকারীদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়। আমি সুষ্ঠু বিচার চাই।’
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রিফাতকে (২৫)। তখন কীভাবে রিফাতকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় তারও বিবরণ দিয়েছেন আয়েশা।
তিনি বলেন, ‘আমি ও আমার স্বামী কলেজ থেকে বের হচ্ছিলাম। তখন কিছু ছেলে এসে তাকে মারতে শুরু করে। আমি তাদের থামানোর চেষ্টা করেও পারিনি। পরে নয়ন, রিশান ফরাজী ও রিফাত ফরাজী এসে হামলা চালায়। আগে নয়ন বিভিন্ন সময় আমাকে বিরক্ত করত। রিকশায় থাকলে লাফিয়ে উঠত। কোথাও গেলে সেখানে গিয়ে ঝামেলা তৈরি করত। বিয়ের পরও নয়ন বিরক্ত করত। এ ব্যাপারটি আমার স্বামী জানতেন। নয়ন তাকেও হত্যার হুমকি দিয়েছিল। বিয়ে হওয়ার দুই মাস আগেও নয়ন আমাকে বিরক্ত করত। সম্পর্ক না করলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিত। এই ব্যাপারটি বাড়িতে না জানানোর জন্য চাপ দিয়ে বলত, এমনটা করলে তোমার বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।’
বুধবার রাতেই রিফাতের বাবা ১২ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত পাঁচ-ছয়জনকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় গতকাল চন্দন নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বলেন, ‘শুনেছি হামলাকারীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে ওৎ পেতে ছিল। আমার একটাই আশা, এ ধরনের সন্ত্রাসী যারা আছে, তাদের বিচার হবে। হত্যাকান্ডে যারা জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। নয়ন একজন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী। জেল খেটেছে।’
বুধবার সকালে বরগুনার কলেজ সড়কের ক্যালিক্স কিন্ডারগার্টেনের সামনে দিনদুপুরে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে রিফাতকে কুপিয়ে জখম করা হলে গুরুতর অবস্থায় তাকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে ভর্তির পর ওই দিন বিকালে রিফাত মারা যান।